সবুজের বুকে মেঘের বাড়ি

প্রকাশঃ জুন ১৯, ২০১৫ সময়ঃ ৩:৫১ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:২২ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

laurerghor4নীল আকাশ এখানে জলের সাথে মিতালী করে, আকাশ ঘুমিয়ে পড়ে পাহাড়ের কোলে। পাখির ভিড়ে সাদা হয় সবুজ পাহাড়, আকাশের নীলে নতুন রং পায় হাওরের জল, মেঘের ভেলা খেলা করে সারি সারি পাহাড়ের ভাঁজে। এমন একটি স্নিগ্ধ, শ্যামল আর রূপসী জায়গা এদেশেরই একটি কোনে পড়ে আছে আপন মনে।

সুনামগঞ্জের লাউড়ের গড়। খুব বেশী মানুষের নজর এখনও কাড়তে পারেনি অপ্রকাশিত স্থান বলে। কিন্তু যারা একবার এখানে এসেছেন তারা তার প্রেমে মজেছেন। কেবলই নয়ন মেলে দেখার মত দৃশ্য। প্রাচীন লাউর রাজ্যের স্মৃতি বহন করছে ভারত বাংলাদেশের সীমান্তের এই লাউড়ের গড় এলাকা। সুন্দর নিরিবিলি পরিবেশে খুব কাছ থেকে দেখতে পারেন স্তরে স্তরে সাজানো পাহাড় শ্রেণী। খোলামেলা নিরিবিলি শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশে স্বপরিবারে কিংবা দলবেধে পিকনিকে যাওয়ার জন্য এই এলাকা একটা সুন্দর স্থান।

লাউড়ের গড়ে গেলে আপনি পেতে পারেন আর একটি বাড়তি উপভোগ্য বিষয় “শাহ আlaurerghor3রেফিনের মেলা”। হিন্দু সম্প্রদায়ের দোলপূর্ণিমার ১৩ দিন পর লাউড়ের গড়ের অদূরে পণতীর্থ ধামে হয় বারুণী স্নান ও মেলা। একই দিনে লাউড়ের গড়ে শুরু হয় শাহ আরেফিনের মেলা, চলে ৩ দিন। এই দুই মেলাকে ঘিরে এখানে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসে লক্ষ লক্ষ মানুষ।

ভারতের মেঘালয় সংলগ্ন বাংলাদেশের লাউড়ের গড় নামক স্থানে প্রতি বছর বসে এই মেলা। ঠিক কত বছর আগে শাহ্ আরেফিনের মেলা শুরু হয়েছিল সঠিকভাবে বলা মুশকিল। এটুকু জানা যায়, এই মেলার বয়স ১০০ বছরেরও বেশী। আগে এই মেলার দিনে বিডিআর বিএসএফের সমঝোতায় ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেওয়া হত। দু’দেশের লোক জমায়েত হত তখন এই মেলায়। কিন্তু মেলায় গন্ডগোলের পর থেকে এখন আর সীমান্ত খোলা হয় না। তবে শাহ্ আরেফিনের আস্তানায় (ভারতের খাসিয়া পাহাড়ে) তার বেশ কিছু স্মৃতি চিহ্ন‎ এখনো রয়েছে। ৭টি কূয়া, সুড়ুঙ্গ পথ, পাথরের উপর নামাজ পড়ার পদ চিহ্ন‎ ইত্যাদি।laurerghor1

মেলার এক পাশে বসে রকমারী সামগ্রীর বিক্রয়। অন্য পাশে পীর ফকিরেরা তাদের দলবল নিয়ে গান করছে আলাদা আলাদা তাবু ফেলে। গরু, খাসি, মুরগী জবাই, রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়া সবই হয় মেলা প্রান্তরে।

যেভাবে যেতে হবে:

বর্ষাকালে সাহেব বাড়ি ঘাট হতে স্পীড বোট অথবা ইঞ্জিন বোটে গন্তব্যে পৌঁছা যায়। স্পীডাবোটে সময় লাগে ১.৩০ ঘন্টা আসা যাওয়া বাবদ খরচ আনুমানিক ৬,০০০/- পক্ষান্তরে ইঞ্জিন বোটে সময় লাগে ৪ ঘন্টা এবং আসা যাওয়ার খরচ ৩,০০০/- টাকা। ছুটির দিনে পরিবার-পরিজন নিয়ে নির্মল বাতাসে, সবুজের স্পর্শে ঘুরে আসতে পারেন সুনামগঞ্জের লাউড়ের গড় থেকে।

প্রতিক্ষণ/এডি/জহির

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G